Saturday, September 12, 2015

অচিরেই আরো ৪০,০০০ পুলিশ নিয়োগ দেবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

পুলিশ বাহিনীকে আন্তরিক  অভিন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দেশে যখন কোনো অপতৎপরতা হয়, তা পুলিশ বাহিনী মোকাবেলা করে থাকে। বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস মোকাবেলায় অত্যন্ত দক্ষতার সাথে পুলিশ তারা করে যাচ্ছে। দুর্ভাগ্য যে কয়েকটি দল মিলে এ দেশে যখন সন্ত্রাসী সন্ত্রাসী কর্মকাÐ চালায়, আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করে, সে সময় স্ব-স্ব দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রায় ২০ জন আইনশৃঙ্ঘলা বাহিনীর সদস্য জীবন দিয়েছে। তাদের মধ্যে পুলিশ সদস্য রয়েছে ১৭ জন। যারা জীবন দিয়েছে, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলবো, দেশ মাত্রিকার জন্য তারা যে অবদান রেখেছে, তা জাতি চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্বীকার করবে। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা ২০ মিনিটের দিকে রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ৩৩তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের শিক্ষানবিস সহকারী পুলিশ সুপারদের শিক্ষা সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান তিনি এ সব কথা বলেন। প্রশিক্ষণ সম্পন্নকারী নবীন কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ আপনাদের পেশাগত জীবনের একটি গৌরবোজ্জ্বল দিন। কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হতে চলেছে আপনাদের কঠোর মৌলিক প্রশিক্ষণ। এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পেশাগত জ্ঞান ও শৃঙ্খলার প্রতি যে আনুগত্যবোধ আপনারা অর্জন করেছেন, তা জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় কাজে লাগাবেন, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার সব সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আধুনিকায়নে গুরুত্ব দিয়েছে। তিনি বলেন, আমরা যখনই সরকার গঠন করেছি, দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছি। এ শুভক্ষণে তিনি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মরণ করেন। সেই সঙ্গে তিনি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদদের; যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন। এ ছাড়াও তিনি জাতীয় চার নেতাকে স্মরণ করেন। সেই সঙ্গে সমবেদনা জানান মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত মা-বোন ও অগণিত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার প্রতি। মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ও যুদ্ধপরবর্তী সময়ে পুলিশ বাহিনীর অবদান অনস্বীকার্য। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সর্বপ্রথম আক্রমণ চালায় রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে। এ সময় পুলিশের বীর সদস্যরা সামান্য ৩০৩ রাইফেল নিয়ে স্বাধীনতার প্রথম প্রহরে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের সঙ্গে লড়েছেন প্রায় ১৪ হাজার পুলিশ সদস্য। এ সময় শহীদ হয়েছেন সহস্রাধিক পুলিশ সদস্য। তিনি বলেন, এই পুলিশ একাডেমির প্রিন্সিপ্যালসহ ২৪ জন শহীদ শায়িত আছেন পদ্মাতীরে। দেশমাতৃকার প্রতি এই মহান আত্মত্যাগের স্বীকৃতি স্বরূপ আমাদের সরকার ২০১১ সালে বাংলাদেশ পুলিশকে ‘স্বাধীনতা পদকে’ ভূষিত করে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় আওয়ামী সরকারের সাফল্যের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যখনই সরকার গঠন করেছি, দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছি। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উন্নয়নে কাজ করেছি। আওয়ামী লীগ সরকার সব সময় আধুনিক পুলিশ বাহিনী আধুনিকায়নে গুরুত্ব দিয়েছে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একটি যুগোপযোগী আধুনিক পুলিশ বাহিনী গড়ে তোলা। এজন্য আমরা বিভিন্ন বাস্তবমুখী ও জনবান্ধব কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। বাংলাদেশ পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামোতে ৭৩৩টি ক্যাডার পদসহ ৩২ হাজার ৩১টি পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। তথাপিও দেশের জনসংখ্যার অনুপাতে পুলিশের জনবল যথেষ্ট নয়। তিনি বলেন, সে বিবেচনায় আমরা বাংলাদেশ পুলিশে আরো ৫০ হাজার নতুন পদ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ইতোমধ্যে, ১০ হাজার পুলিশ সদস্যের নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি জনবলের নিয়োগ কার্যক্রম অচিরেই সম্পন্ন হবে।
তিনি বলেন, রংপুর ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ গঠনের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। বর্ধিত জনবলের সঙ্গে প্রয়োজনীয় যানবাহন ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি সরবরাহের বিষয়টিও আমাদের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে। সারদার পুলিশ একাডেমির প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘হোম অব পুলিশ’ খ্যাত এই একাডেমিকেও আমরা ঢেলে সাজিয়েছি। নবনিযুক্ত সহকারী পুলিশ সুপারদের মৌলিক প্রশিক্ষণের পাশাপাশি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গধংঃবৎ ড়ভ চড়ষরপব ঝপরবহপব ডিগ্রি প্রদান করা হচ্ছে। এ ছাড়া আধুনিক শ্রেণিকক্ষ, কম্পিউটার ল্যাব, ল্যাংগুয়েজ ল্যাব, ফরেনসিক ডেমোন্সট্রেশন ল্যাব, ড্রাইভিং ও শ্যুটিং সিমিউলেটর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে আধুনিক ও মানসম্পন্ন করতে জনবল বৃদ্ধি, অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ হাতে নিয়েছি। ঞযব চৎড়লবপঃ ভড়ৎ ঊহযধহপরহম ঈুনবৎ ঈৎরসব ওহাবংঃরমধঃরড়হ ঈধঢ়ধনরষরঃু ড়ভ ইধহমষধফবংয চড়ষরপব শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ দ্রæত এগিয়ে চলছে। সাইবার ক্রাইম, মানিলন্ডারিং, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসী কর্মকাÐ প্রতিরোধে পুলিশের পৃথক বিশেষায়িত ইউনিট গঠনের কাজ এগিয়ে চলছে। এ লক্ষ্যে পুলিশ বাহিনীকে আমরা উন্নত প্রশিক্ষণও দিচ্ছি। এ জন্য তথ্য-প্রযুক্তির প্রয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর সভাস্থলে উপস্থিত ছিলেন, স্বররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরিফ দিলু, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব শাহরিয়ার আলম, তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহম্মেদ পলক এমপি, রাজশাহী সদর আসনের সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ আক্তার জাহান, পুলিশের মহা পরিদর্শক একে এম শহিদুল হক বিপিএম, পিপিএম, একাডেমীর প্রিন্সিপাল নাইম আহম্মেদ বিপিএম, মহানগর আ’লীগের সভাপতি সাবেক সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, জেলা আ”লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ প্রমুখ। এর আগে গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ হেলিকপ্টারে করে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে পৌঁছান।
সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির নবনির্মিত অতিথি ভবন ‘তরুণিমা’ এবং প্যারেড গ্রাউন্ডের নবনির্মিত গ্যালারির উদ্বোধন করেন। পরে ৩৩তম বিসিএস ব্যাচের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তাদের অভিবাদন গ্রহণ করেন। প্যারেড পরিদর্শন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের মধ্যে পদক বিতরণ করেন। পদক বিতরণ শেষে তাদের উদ্দেশে প্রধান অতিথির ভাষণ দেন। বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষ নাঈম আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক, রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহীর সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনসহ পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ৩৩তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের সমাপনী কুচকাওয়াজে ২৬ জন নারীসহ মোট ১৬১ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশ নেন। এ সময় ১ বছর মেয়াদী প্রশিক্ষনে অশ্বারোহনে প্রথম স্থান অধিকার কারী নবীন সহকারী পুলিশ সুপার পংকজ বড়–য়া, একাডেমিক্সে রেজওয়ানা চৌধূরী এবং সর্ব বিষয়ে পংকজ বড়–য়াকে পদক প্রদান করেন। ৩৩তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের সমাপনী কুচকাওয়াজে ২৬ জন নারীসহ মোট ১৬১ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশ নেন। এ সময় ১ বছর মেয়াদী প্রশিক্ষনে অশ্বারোহনে প্রথম স্থান অধিকার কারী নবীন সহকারী পুলিশ সুপার পংকজ বড়–য়া, একাডেমিক্সে রেজওয়ানা চৌধূরী এবং সর্ব বিষয়ে পংকজ বড়–য়াকে পদক প্রদান করেন।
জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশের পেশাগত জ্ঞান কাজে লাগাতে হবে : প্রধানমন্ত্রী
মো. মেহেদী হাসান, চারঘাট
পুলিশ বাহিনীকে আন্তরিক অভিন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দেশে যখন কোনো অপতৎপরতা হয়, তা পুলিশ বাহিনী মোকাবেলা করে থাকে। বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস মোকাবেলায় অত্যন্ত দক্ষতার সাথে পুলিশ তারা করে যাচ্ছে। দুর্ভাগ্য যে কয়েকটি দল মিলে এ দেশে যখন সন্ত্রাসী সন্ত্রাসী কর্মকাÐ চালায়, আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করে, সে সময় স্ব-স্ব দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রায় ২০ জন আইনশৃঙ্ঘলা বাহিনীর সদস্য জীবন দিয়েছে। তাদের মধ্যে পুলিশ সদস্য রয়েছে ১৭ জন। যারা জীবন দিয়েছে, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলবো, দেশ মাত্রিকার জন্য তারা যে অবদান রেখেছে, তা জাতি চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্বীকার করবে। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা ২০ মিনিটের দিকে রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ৩৩তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের শিক্ষানবিস সহকারী পুলিশ সুপারদের শিক্ষা সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান তিনি এ সব কথা বলেন। প্রশিক্ষণ সম্পন্নকারী নবীন কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ আপনাদের পেশাগত জীবনের একটি গৌরবোজ্জ্বল দিন। কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হতে চলেছে আপনাদের কঠোর মৌলিক প্রশিক্ষণ। এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পেশাগত জ্ঞান ও শৃঙ্খলার প্রতি যে আনুগত্যবোধ আপনারা অর্জন করেছেন, তা জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় কাজে লাগাবেন, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার সব সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আধুনিকায়নে গুরুত্ব দিয়েছে। তিনি বলেন, আমরা যখনই সরকার গঠন করেছি, দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছি। এ শুভক্ষণে তিনি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মরণ করেন। সেই সঙ্গে তিনি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদদের; যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন। এ ছাড়াও তিনি জাতীয় চার নেতাকে স্মরণ করেন। সেই সঙ্গে সমবেদনা জানান মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত মা-বোন ও অগণিত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার প্রতি। মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ও যুদ্ধপরবর্তী সময়ে পুলিশ বাহিনীর অবদান অনস্বীকার্য। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সর্বপ্রথম আক্রমণ চালায় রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে। এ সময় পুলিশের বীর সদস্যরা সামান্য ৩০৩ রাইফেল নিয়ে স্বাধীনতার প্রথম প্রহরে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের সঙ্গে লড়েছেন প্রায় ১৪ হাজার পুলিশ সদস্য। এ সময় শহীদ হয়েছেন সহস্রাধিক পুলিশ সদস্য। তিনি বলেন, এই পুলিশ একাডেমির প্রিন্সিপ্যালসহ ২৪ জন শহীদ শায়িত আছেন পদ্মাতীরে। দেশমাতৃকার প্রতি এই মহান আত্মত্যাগের স্বীকৃতি স্বরূপ আমাদের সরকার ২০১১ সালে বাংলাদেশ পুলিশকে ‘স্বাধীনতা পদকে’ ভূষিত করে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় আওয়ামী সরকারের সাফল্যের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যখনই সরকার গঠন করেছি, দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছি। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উন্নয়নে কাজ করেছি। আওয়ামী লীগ সরকার সব সময় আধুনিক পুলিশ বাহিনী আধুনিকায়নে গুরুত্ব দিয়েছে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একটি যুগোপযোগী আধুনিক পুলিশ বাহিনী গড়ে তোলা। এজন্য আমরা বিভিন্ন বাস্তবমুখী ও জনবান্ধব কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। বাংলাদেশ পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামোতে ৭৩৩টি ক্যাডার পদসহ ৩২ হাজার ৩১টি পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। তথাপিও দেশের জনসংখ্যার অনুপাতে পুলিশের জনবল যথেষ্ট নয়। তিনি বলেন, সে বিবেচনায় আমরা বাংলাদেশ পুলিশে আরো ৫০ হাজার নতুন পদ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ইতোমধ্যে, ১০ হাজার পুলিশ সদস্যের নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি জনবলের নিয়োগ কার্যক্রম অচিরেই সম্পন্ন হবে।
তিনি বলেন, রংপুর ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ গঠনের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। বর্ধিত জনবলের সঙ্গে প্রয়োজনীয় যানবাহন ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি সরবরাহের বিষয়টিও আমাদের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে। সারদার পুলিশ একাডেমির প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘হোম অব পুলিশ’ খ্যাত এই একাডেমিকেও আমরা ঢেলে সাজিয়েছি। নবনিযুক্ত সহকারী পুলিশ সুপারদের মৌলিক প্রশিক্ষণের পাশাপাশি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গধংঃবৎ ড়ভ চড়ষরপব ঝপরবহপব ডিগ্রি প্রদান করা হচ্ছে। এ ছাড়া আধুনিক শ্রেণিকক্ষ, কম্পিউটার ল্যাব, ল্যাংগুয়েজ ল্যাব, ফরেনসিক ডেমোন্সট্রেশন ল্যাব, ড্রাইভিং ও শ্যুটিং সিমিউলেটর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে আধুনিক ও মানসম্পন্ন করতে জনবল বৃদ্ধি, অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ হাতে নিয়েছি। ঞযব চৎড়লবপঃ ভড়ৎ ঊহযধহপরহম ঈুনবৎ ঈৎরসব ওহাবংঃরমধঃরড়হ ঈধঢ়ধনরষরঃু ড়ভ ইধহমষধফবংয চড়ষরপব শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ দ্রæত এগিয়ে চলছে। সাইবার ক্রাইম, মানিলন্ডারিং, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসী কর্মকাÐ প্রতিরোধে পুলিশের পৃথক বিশেষায়িত ইউনিট গঠনের কাজ এগিয়ে চলছে। এ লক্ষ্যে পুলিশ বাহিনীকে আমরা উন্নত প্রশিক্ষণও দিচ্ছি। এ জন্য তথ্য-প্রযুক্তির প্রয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর সভাস্থলে উপস্থিত ছিলেন, স্বররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরিফ দিলু, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব শাহরিয়ার আলম, তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহম্মেদ পলক এমপি, রাজশাহী সদর আসনের সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ আক্তার জাহান, পুলিশের মহা পরিদর্শক একে এম শহিদুল হক বিপিএম, পিপিএম, একাডেমীর প্রিন্সিপাল নাইম আহম্মেদ বিপিএম, মহানগর আ’লীগের সভাপতি সাবেক সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, জেলা আ”লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ প্রমুখ। এর আগে গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ হেলিকপ্টারে করে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে পৌঁছান।
সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির নবনির্মিত অতিথি ভবন ‘তরুণিমা’ এবং প্যারেড গ্রাউন্ডের নবনির্মিত গ্যালারির উদ্বোধন করেন। পরে ৩৩তম বিসিএস ব্যাচের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তাদের অভিবাদন গ্রহণ করেন। প্যারেড পরিদর্শন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের মধ্যে পদক বিতরণ করেন। পদক বিতরণ শেষে তাদের উদ্দেশে প্রধান অতিথির ভাষণ দেন। বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষ নাঈম আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক, রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহীর সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনসহ পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ৩৩তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের সমাপনী কুচকাওয়াজে ২৬ জন নারীসহ মোট ১৬১ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশ নেন। এ সময় ১ বছর মেয়াদী প্রশিক্ষনে অশ্বারোহনে প্রথম স্থান অধিকার কারী নবীন সহকারী পুলিশ সুপার পংকজ বড়–য়া, একাডেমিক্সে রেজওয়ানা চৌধূরী এবং সর্ব বিষয়ে পংকজ বড়–য়াকে পদক প্রদান করেন। ৩৩তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের সমাপনী কুচকাওয়াজে ২৬ জন নারীসহ মোট ১৬১ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশ নেন। এ সময় ১ বছর মেয়াদী প্রশিক্ষনে অশ্বারোহনে প্রথম স্থান অধিকার কারী নবীন সহকারী পুলিশ সুপার পংকজ বড়–য়া, একাডেমিক্সে রেজওয়ানা চৌধূরী এবং সর্ব বিষয়ে পংকজ বড়–য়াকে পদক প্রদান করেন।

No comments:

Post a Comment